অহংকারী মাথা নিচু করে
অহংকারীর মাথা নিচু
এক জঙ্গলে একটা বাঁশগাছ আর একটা জাম গাছ ছিল কাছে। জামুন গাছটি বাঁশ গাছের চেয়ে অনেক শক্তিশালী ছিল। বাঁশগাছটি ছিল খুবই সরু এবং খুব নমনীয়। যে দিকে বাতাস, বাঁশগাছও সেদিকেই বেঁকে যেত। সর্বদা বাতাসের গতি এবং দিক অনুযায়ী চলুন। তুমি আমার মত সোজা হয়ে দাঁড়াও না কেন? আপনি বাতাসকেও বলুন যে আপনি তার আদেশ মানতে পারবেন না। বাতাসে আপনার শক্তি উপস্থাপন করুন। এই পৃথিবীতে, চারদিকে কেবল শক্তিশালীদেরই আধিপত্য রয়েছে। এটা দেখে জামুন গাছ রেগে গিয়ে বলল, 'আমার কথার উত্তর দাও না কেন?'
বাঁশগাছ বলল, 'তুমি আমার চেয়ে শক্তিশালী। আমি খুবই দুর্বল। তবে আমি আপনাকে একটি পরামর্শ দিচ্ছি যে প্রবল বাতাস আপনার জন্যও ক্ষতিকারক প্রমাণিত হতে পারে। বাতাসের গতিবেগ বেশি হলে আমাদের তা সম্মান করা উচিত। অন্যথায় মাঝে মাঝে অনুতপ্ত হতে হতে পারে।'
জামুন গাছটি তার ক্ষমতার জন্য খুব গর্বিত ছিল। সে বাঁশঝাড়ের উপর রেগে গিয়ে বলল, “প্রবল বাতাসও আমার ক্ষতি করতে পারে না। আমার এই কথাটি সর্বদা মনে রেখো।'
ধীরে ধীরে চলমান বাতাস বাঁশঝাড় এবং জামুন গাছের মধ্যে যা ঘটেছিল তা শুনেছিল। বাতাস প্রবল বেগে জামুন গাছে ধাক্কা খেয়ে এগিয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর বাতাস নিজের মধ্যে আরও কিছু শক্তি জোগাড় করে নিজেকে আরও গতিশীল করে তুলল। এখন বাতাস ঝড়ে পরিণত হয়েছে। সেই প্রবল বাতাসের প্রভাবে বাঁশঝাড় প্রায় বেঁকে গেছে। সেই একই বাতাস এখন আবার জামুন গাছে আঘাত করেছে, কিন্তু সেই প্রবল বাতাসের প্রভাব জামুন গাছে পড়েনি। সে একইভাবে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। জামুন গাছের ডালগুলো ঝড়ো হাওয়া থামানোর আপ্রাণ চেষ্টা করল, কিন্তু প্রবল বাতাস জামুন গাছের ডালগুলোকে পেছনে ঠেলে দিল। প্রবল বাতাসে জামুন গাছ ভারসাম্য হারিয়ে শিকড় দুর্বল হয়ে জায়গা ছেড়ে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই জামুন গাছটা মাটিতে পড়ে গেল। বাঁশগাছ ভাবতে লাগল, জামুন গাছ যদি আমার কথা মেনে বাতাসকে সম্মান করত, তাহলে আজ তার শেষ হত না। এই জামুন গাছ ছিল অহংকারী। অহংকারীর মাথা সবসময়ই যে নিচু থাকে তা হয়তো জানতাম না।'
শিক্ষা― এই গল্প থেকে আমরা জানতে পারি অহংকারই মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু। অহংকারী ব্যক্তি বিনষ্ট হয়। তাই একজন মানুষের কখনই অহংকার করা উচিত নয়।
