কর্মফল

bookmark

করম
 
 এর ফল ছিল একটি মেয়ে। সে খুব সুন্দর ছিল, তার শরীর পাতলা ছিল। রং ফর্সা ছিল। মুখ ছিল গোলাকার। বড় বড় চোখ ছিল কাটা আম্বিসের মত। তার লম্বা কালো চুল ছিল। সে মিষ্টি করে কথা বলল। ধীরে ধীরে সে বড় হল। তার বাবা বংশের পুরোহিত ও নাপিতকে বর খুঁজতে বললেন, সেই দানারা মিলে বর খুঁজলেন। না মেয়ে বরকে জন্মাতে দেখেনি, না বরকে কনে হতে দেখেছে। মেয়েটি যখন প্রথমবার তার স্বামীকে দেখে, তার কুৎসিত চেহারা দেখে সে খুব দুঃখিত হয়েছিল। উল্টো, সুন্দরী মেয়েকে দেখে ছেলেটা ফুঁপিয়ে ওঠেনি।
 
 রাত হলেই মেয়ের শাশুড়ি দুধ ঢেলে তাতে গুড় বা চিনি মিশিয়ে মেয়েকে বাটি দিতেন- শ্বশুরকে বলে, "যাও, তোমার লাদাকে (স্বামী) পান দাও।" বাটিটা হাতে নিয়ে স্বামীর কাছে গিয়ে কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকত। তার স্বামী এক বাটি দুধ নিয়ে পান করতেন। এভাবে অনেক দিন কেটে গেল। এটা প্রতিদিনের মত ছিল। একদিন তার স্বামী ভাবতে লাগল, সে কথা বলে না কেন? আজকে ফোন না করে মেনে নেবেন বলে ঠিক করলেন। আমি তার হাত থেকে বাটি নেব না যতক্ষণ না সে দুধ খাও। তিনি বাটি ধরেননি। বউও বাটিটা হাতে ধরে দাঁড়িয়ে রইল, কিছু বলল না। বেচারা সারারাত দাঁড়িয়ে থাকলেও মুখ খুলল না। সেই একগুঁয়ে মানুষটাও দুধের বাটি নিল না।
 
 সকাল হলেই স্বামী ভাবল, এই বেচারা আমার জন্য কত কষ্ট করেছে। আমার সাথে থাকাটা আনন্দের নয়। এটাকে তার কাছে রাখা তার সাথে চরম অবিচার করা। বেচারা সেখানেও কি করে সুখে থাকতে পারে! সে মনে মনে বিড়বিড় করল। সে দম বন্ধ হয়ে মারা গেল। তার কোনো রোগ ছিল না। বাইরে থেকে তাকে দেখতে ভালোই লাগছিল। অভিভাবকরা তার অদ্ভুত রোগ নিয়ে চিন্তিত হতে থাকেন। তিনি অনেক ডাক্তার ও জ্যোতিষীর কাছে গেলেন, কিন্তু কেউ তার রোগ বুঝতে পারেননি। সে তার হাতের রেখাগুলো দেখতে পেল। জ্যোতিষী বললেন, "কন্যা! তুমি আগের জন্মের মতোই ঠিক ফল পাচ্ছো। এতে তোমার দোষ নেই, তোমার স্বামীরও নয়। তোমার স্বামী পূর্বজন্মে সাদা মুক্তা দান করেছিলেন এবং তোমাকে অনেক কালো উরাদ দেওয়া হয়েছিল। যারা জিজ্ঞাসা করেছিল তাদের ব্যাগ।সাদা মুক্তা দান করে আপনার স্বামী একটি সুন্দর স্ত্রী পেয়েছেন এবং আপনি উরাদের মতো কুৎসিত পুরুষ পেয়েছেন, এমন অবস্থায় আপনার স্বামীর বাড়িতে যাওয়া ভাল এবং কোনও প্রকার খারাপ জিনিস না নিয়ে যান। মনে মনে অনুভব কর, যা পেয়েছ তাতে সন্তুষ্ট হও এবং ভবিষ্যতের জন্য খুব ভালো কাজ কর, পরের জীবনে তার ফল অবশ্যই পাবে।" স্বামী. তারা সুখে বসবাস করতে লাগল।