তিনে না তেরোতেও না

bookmark

না তিনে না তেরোতে
 
 শহরে শেঠ ছিল না। তার উপাধি অনুযায়ী তিনি ছিলেন অগাধ সম্পদের মালিক। বাড়ি ছিল, বাংলো ছিল, চাকর ছিল। সেখানে একজন চতুর হিসাবরক্ষকও ছিলেন যিনি সমস্ত ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। নগর-ভাধু মানেই শহরের সবচেয়ে সুন্দরী পতিতা। তার উপস্থাপনের প্রয়োজন অনুসারে, নগর-বধূ নগর-সেঠকে ধনী ব্যক্তি জেনে সম্মান প্রদর্শন করেন। তারপর তাকে তার বাড়িতেও আমন্ত্রণ জানালেন। আতিথেয়তায় কোনো কসরত রাখেনি নগর-বধূ। অনেক হাসপাতালে ভর্তি এবং নিশ্চিত করে যে সে শেঠকে খুব ভালবাসে। সেখানে প্রায়ই সন্ধ্যা কেটে যেত। সারা শহরে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। একথা শুনে খাতাওয়ালার চোখ ছলছল করতে লাগল। তার স্বাস্থ্য একটু খারাপ হয়ে গেল। কয়েকদিন বিছানা থেকে উঠতে পারিনি। এর মধ্যেই চলে এলো নগর বধূর জন্মদিন। শেঠ হিসাবরক্ষককে ডেকে নির্দেশ দিলেন যে একটি হীরা খচিত নওলখা নেকলেস কিনে তার পক্ষে নগর-বধূকে পাঠাতে হবে। নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল যে বইখাতা নিজেই উপহারটি নিতে হবে। পারিবারিক কেরানি তার আনুগত্য শেঠের জন্য যথেষ্ট ছিল না। তিনি তার পুরো পরিবার এবং ব্যবসার দিকেও ছিলেন। তিনি শেঠকে বুঝিয়ে বললেন যে তারা ভুল করছে। বলার চেষ্টা করে, একজন পতিতা কাউকে ভালোবাসে না, টাকা দিয়েই করে। বইখাতা উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, নাগর-শেঠের মতো অনেকেই প্রেমের মায়ায় সেখানে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু শেঠ বুঝতে চাননি, আসেননি। তাদের কঠোরভাবে বলেছিল যে বইখাতাকে শহর-বধূর জন্য একটি উপহার আনতে হবে। হীরে জড়ানো নওলখার নেকলেস কিনে নগর-বধূর বাড়ির দিকে। কিন্তু পথে তিনি এই সমস্যার সমাধানের উপায় ভাবতে থাকলেন। 
 
 
 কনের বাড়িতে পৌঁছে নওলাখা নেকলেসের বাক্স খুলে বললেন, "আপনি যাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন তার কাছ থেকে এই উপহার।"
 
 নাগর-বধূ দ্রুত তিন নাম গুনলাম। শেঠ ওই তিনজনের মধ্যে না থাকায় বইখাতা অবাক হলো না। তিনি দায়মুক্তির সাথে বললেন, "দেবী, এই তিনজনের মধ্যে যে ভদ্রলোক এই উপহার পাঠিয়েছেন তার নাম নেই।"
 
 নগর-বধূর হাসি মিলিয়ে গেল। সামনে একটা চকচকে নওলখার নেকলেস ছিল এবং সেটা একটা বিরাট ভুল করেছে। তিনি উপহারটি পাশ দিয়ে যেতে দেখলেন। সে সঙ্গে সঙ্গে তেরোটি নাম গণনা করল। কিন্তু এবার হিসাবরক্ষকের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। রাগে নওলখার নেকলেসের বাক্সটা তুলে বিছানা দিয়ে বন্ধ করে দিয়ে উঠে পড়ল। নগর-বধূ কাঁদতে লাগল। তিনি বলেছেন যে তিনি ভুল করেছেন। কিন্তু হিসাবরক্ষক চলে গেলেন। উত্তরের অপেক্ষায় ছিল নগরবধূ। তুমি শুধু ভালোবাসার মায়া নিয়ে বসে আছো।" 
 
 শেঠের চোখ খুলে গেল। এরপর তাকে আর নগরবধূর হারে দেখা যায়নি।