তেনালিরাম এবং উপহার

bookmark

তেনালিরাম এবং উপহার
 
 একদিন প্রতিবেশী দেশ থেকে একজন দূত বিজয়নগরের রাজা কৃষ্ণদেব রায়ের দরবারে আসেন। এটি রাজা কৃষ্ণদেব রায়কে অনেক উপহারও এনেছিল। বিজয়নগরের দরবারীরা দূতকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। তৃতীয় দিন যখন দূত তার দেশে যেতে শুরু করলেন তখন রাজা কৃষ্ণদেব রায়ও তার প্রতিবেশী দেশের রাজাকে কিছু মূল্যবান উপহার দিলেন।আমি কিছু উপহার দিতে চাই। সোনা বা রূপা, হীরা, রত্ন, যা খুশি চেয়ে নাও।' 'স্যার, আমি এসব চাই না। দিতে চাইলে অন্য কিছু দাও। বার্তাবাহক কথা বললেন। 'মহারাজ, আমাকে এমন একটি উপহার দিন, যা সুখে-দুঃখে সর্বদা আমার সঙ্গে থাকবে এবং যা আমার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।' একথা শুনে রাজা কৃষ্ণদেব রায় বিস্মিত হলেন। সবার মুখেই কষ্টের ছাপ দেখা যাচ্ছিল। এমন উপহার কী হতে পারে তা কেউ বুঝতে পারেনি। তখন রাজা কৃষ্ণদেব রায় তেনালিরামকে স্মরণ করলেন। তিনি নিজেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাজা তেনালিরামকে সম্বোধন করে জিজ্ঞেস করলেন- 'দূত যেরূপ উপহার চেয়েছেন, তুমি কি এমন উপহার আনতে পারবে?' 'নিশ্চয় মহারাজ, এই ভদ্রলোক যখন বিকেলে এখান থেকে চলে যাবেন, সেই উপহার তাঁর কাছে থাকবে।' নির্ধারিত সময়ে দূত তার দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার জন্য প্রস্তুত হলেন। সমস্ত উপহার তাঁর রথে রাখা ছিল। রাজা কৃষ্ণদেব রায় তেনালীরামের দিকে তাকিয়ে বললেন - 'তেনালীরাম, তুমি সেই উপহার আনোনি?' এই বলে তেনালীরাম হেসে বললেন, 'মহাশয়, সেই উপহার এই সময়েও তাঁর কাছে আছে। কিন্তু তিনি তা দেখতে পাচ্ছেন না। তাদের পিছনে ফিরে তাকাতে বলুন।'
 
 বার্তাবাহক পিছনে ফিরে তাকালেন, কিন্তু তিনি কিছুই দেখতে পেলেন না। তিনি বললেন- 'ওই গিফট কই? আমি এটা দেখতে পাচ্ছি না।' তেনালীরাম হেসে বললেন- 'মনে করে দেখুন স্যার, সেই উপহার আপনার পিছনে- আপনার ছায়া, সেই আপনার ছায়া। সুখে, দুঃখে সারাজীবন সাথে থাকবে আর কেউ তা কেড়ে নিতে পারবে না।' একথা শুনে রাজা কৃষ্ণদেব রায় হাসলেন। দূতও হেসে বললেন- 'মহারাজ, তেনালীরামের বুদ্ধিমত্তার অনেক প্রশংসা শুনেছিলাম, আজ তার প্রমাণও পেলাম।' তেনালীরাম হাসলেন।