শনির মহাদশা
শনির মহাদশা
হাকিরা গ্রাম থেকে প্রথমবার শহরে এসে দেখেন রাস্তার ধারে বসে একজন পণ্ডিতজী ভবিষ্যৎ বলছেন। হাকিরা ভাবল, তোমাকেও দেখাই।
হাকিরার হাত দেখে পণ্ডিতজী চেঁচিয়ে উঠলেন - হোস্ট! ভয়াবহ বিপর্যয়!! রাম রাম রাম!! শনির মহাদশায় কেতুর অন্তরদশা! রাহু তির্যক চোখে তাকিয়ে আছে সূর্যের দিকে। আর মঙ্গল গ্রহ আত্মপ্রসন্ন হয়ে পিছু হটছে.. ওহ ওহে!!! চাঁদে গ্রহন হয়েছে… আর এটা কী… বুদ্ধ রাগ করে বসে আছেন… শুধু রামই আপনাকে রক্ষা করুন।. সূর্যের মাত্রা খুবই মাঝারি, সাথে শনির অর্ধ-সাড়ে সতী… বার দারুণ সর্বনাশ, মহা ধ্বংস...
পণ্ডিতজি একটা টেপ রেকর্ডের মতো বাজাতে থাকলেন... যতটুকু তার জ্যোতিষশাস্ত্রের জ্ঞান ছিল বা না ছিল.. সব ফেলে দিয়েছিলেন.. ভেবেছিলেন এই মক্কেল নিশ্চয়ই ফাঁদে পড়বেন..
হাকিরা -উই পণ্ডিতজি মহারাজ! এই কথা বলবেন না... কেউ একটা সমাধান দিবেন.. দয়া করুন.. প্লিজ কিছু করুন, হয়ে যাবে।
হাকিরা (কান্না নিয়ে) - পন্ডিতজি মহারাজ! খোদার কসম আমার কাছে এগারোশ টাকা নেই
পন্ডিতজী (আমার পালথি গুছিয়ে) - আরেকটা হাত দাও… (হাতের দিকে তাকিয়ে) .. আহা! মনে হচ্ছে চাঁদ থেকে একটা গ্রহন নেমেছে... এক কাজ কর, পাঁচশো এক টাকা তুলে নাও.. একটা পুজো করি.. সব ঠিক হয়ে যাবে।
হাকিরা - পন্ডিতজি মহারাজ! খোদার কসম আমার কাছে পাঁচশ টাকা নেই...
পন্ডিতজির মনে হলো মক্কেলের পালানো উচিত নয়, এত লোভ ঠিক নয়।
পন্ডিত জি - শুধু আর একটা হাত দিন.. দু-একটা জিনিস মিস হয়ে গেছে... (হাতের দিকে তাকিয়ে) .. মনে হচ্ছে সূর্যের মাত্রাটা একটু বেড়েছে আর হ্যাঁ মীন রাশি এই বছর ভালোই যাচ্ছে... একটা কর জিনিস একশ এক টাকা তুলে নাও.. একটা পুজো করি.. সব ঠিক হয়ে যাবে।
হাকিরা - পন্ডিতজি মহারাজ! ঈশ্বরের কসম আমার একশ টাকাও নেই...
পণ্ডিত জি - আমিই হোস্ট! লাইয়ে হাত লাইয়ে.. (রাগ করে হাত দেখে)... সব ঠিকঠাক মনে হচ্ছে, শুধু রাহু কেতু আর শনির হাসি… চল ভাই… কি মনে থাকবে, এগারো টাকা বের করে নাও… একটা পুজো হয়ে যাবে.. জরিমানা
হাকিরা ( করুণ মুখে) - পন্ডিতজি মহারাজ! ঈশ্বরের কসম আমার কাছে এগারো টাকাও নেই...
পণ্ডিতজী ক্ষিপ্ত হয়ে চিৎকার করে বললেন- ওরে মানুষ! একটা হাত নিয়ে এসো, দাও.. ছেড়ে দিই (হাত নাড়িয়ে)... শনিকে কিছু করতে হবে... এখন এর থেকে কম কী হবে... এক-চতুর্থাংশ টাকা বের কর... চলো একটা পাই। পূজা শেষ.. সব ঠিক হয়ে যাবে।
হাকিরা - পন্ডিত জি! ঈশ্বরের কসম আমার কাছে এক রুপির এক-চতুর্থাংশও নেই...
পন্ডিত জি - আমার কাছে এক চতুর্থাংশ টাকাও নেই??
হাকিরা - না...
পন্ডিত জি (তার ভঙ্গি ঠিক করে, পিছনের সিটে বসেন...) - যাও ওয়াটস... শনিকে ঢুকতে দাও... শনিকে কী নিতে দাও... শনিকে ঢুকতে দাও (হাত নেড়ে) শনিকে প্রবেশ করুক...
