সবচেয়ে মূল্যবান উপহার

bookmark

সবচেয়ে মূল্যবান উপহার
 
 মোহন কাকা ডাক বিভাগের একজন কর্মচারী ছিলেন। বছরের পর বছর তিনি মাধোপুর এবং আশেপাশের গ্রামে চিঠি বিতরণ করতেন। 
 
 একদিন তিনি চিঠি পেলেন, ঠিকানাটি মাধোপুরের কাছাকাছি কিন্তু আজকের আগে তিনি ওই ঠিকানায় কোনো চিঠি দেননি। ব্যাগ তুলে চিঠিগুলো বিলি করতে বেরিয়ে গেল। সব চিঠি বিলি করার পর ওরা সেই নতুন ঠিকানার দিকে এগোতে লাগলো। 
 
 দরজায় পৌঁছে সে ডাক দিল, "ডাক!"
 
 ভেতর থেকে একটা মেয়ের কন্ঠ ভেসে এল, "চাচা, দরজার নিচ থেকে চিঠিটা ওখানে ফেলে দাও। ” 
 
 “অদ্ভুত মেয়ে, এত দূর থেকে একটা চিঠি আনতে পারি আর এই রানী দরজা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না!”, কাকা মনে মনে ভাবলেন। রেজিস্ট্রি এসেছে, সই করলেই রিসিভ হবে!”, কাকা বিরক্তি নিয়ে বললেন 
 
 “এইমাত্র এসেছে।”, ভিতর থেকে একটা আওয়াজ এলো। 
 
 কাকা অপেক্ষা করলো, কিন্তু 2 মিনিট পরও কেউ না আসায় তার ধৈর্য ভেঙে গেল। মনে হল। .
 
 একটি 12-13 বছর বয়সী মেয়ে ছিল যার উভয় পা কেটে ফেলা হয়েছিল। সে তার অধৈর্যতায় লজ্জিত হলো। একই ঠিকানা থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। এবারও সব জায়গায় চিঠি পাঠানোর পর ওরা ওই বাড়ির সামনে পৌঁছে গেল! 
 
 “চিঠি এসেছে, স্বাক্ষরের দরকার নেই… নিচ থেকে দিয়ে দিই।” কাকা বললেন। আমি এখন আসছি।", মেয়েটি ভিতর থেকে চিৎকার করে উঠল। 
 
 কিছুক্ষণ পর দরজা খুলল।
 
 মেয়েটির হাতে একটা গিফট প্যাকিং ছিল। হাসিমুখে মেয়েটি। কাকা বাক্সটা নিয়ে বাড়ির দিকে হেঁটে গেল, সে বুঝতে পারল না বাক্সে কী থাকবে! বাক্সে একজোড়া চপ্পল। কাকা বছরের পর বছর খালি পায়ে চিঠি বিতরণ করতেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ তাতে মনোযোগ দেয়নি। তার মনে বারবার একই ভাবনা আসছিল - মেয়েটি তাকে চপ্পল দিয়েছে কিন্তু সে তার পা কোথা থেকে পাবে? অন্যের কষ্ট অনুভব করা এবং তা কমানোর চেষ্টা করা একটি মহৎ কাজ। অন্যের পায়ের প্রতি নিজের পা নেই এমন একটি শিশুর সংবেদনশীলতা আমাদের একটি দুর্দান্ত বার্তা দেয়। আসুন আমরাও আমাদের সমাজ, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব-অপরিচিত সবার প্রতি সংবেদনশীল হই... আসুন আমরাও কারো খালি পায়ের চপ্পল হই এবং দুঃখে ভরা এই পৃথিবীতে কিছু সুখ ছড়িয়ে দেই!