গুরু-ভক্তির মাধ্যমে মন শুদ্ধিকরণ
গুরু-ভক্তি
নরেন দে (স্বামী বিবেকানন্দ) দিয়ে মন পরিশুদ্ধ করা ছাত্রজীবনে আর্থিক বৈষম্যের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। একদিন তিনি তাঁর গুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসকে বললেন- 'যদি আপনি কালী মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন তবে তিনি আমার বর্তমান আর্থিক সমস্যা দূর করবেন।' রামকৃষ্ণ বললেন- 'নরেন, সংকট তোমার, তাই তুমি নিজেই মন্দিরে গিয়ে কালী মাকে জিজ্ঞেস করো, তিনি অবশ্যই শুনবেন।' এই বলে তাকে মন্দিরে পাঠিয়ে দিল। সেখানে তিনি বললেন, 'মা আমাকে ভক্তি দাও' আর কিছু না বলে গুরুজীর কাছে ফিরে এলেন। জিজ্ঞেস করলেন- 'কি চেয়েছ?' 'মা আমাকে ভক্তি দাও,' বলল নরেন। 'আরে, এতে তোমার কষ্ট দূর হবে না, তুমি আবার ভেতরে গিয়ে মায়ের কাছে স্পষ্ট দাবি করো' সে গিয়ে আগের মতোই করল। তৃতীয়বার যাওয়ার পরও যখন তিনি কালী মাকে শুধু বললেন- 'মা, আমাকে ভক্তি দাও,' তখন পরমহংসজী হেসে বলতে লাগলেন- 'নরেন! আমি জানতাম যে আপনি বস্তুগত সুখের জন্য জিজ্ঞাসা করবেন না, কারণ আপনার হৃদয়ে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জনের নিখুঁত কৌতূহল জন্মেছে এবং তাই আমি আপনাকে তিনবার ভক্তি চাইতে পাঠিয়েছিলাম। আমি নিজেই আপনার বর্তমান আর্থিক সংকটের সমাধান করতে পারতাম।'
উদ্দেশ্য:
শুদ্ধ গুরু বা ভক্তের সান্নিধ্যে থাকার মাধ্যমে মনের পরিশুদ্ধি সহজ ও সহজ হয়। হেনরি ফোর্ডের প্রপৌত্র আলফ্রেড ফোর্ড (হেনরি ফোর্ড-৩) 'ইসকন'-এর প্রতিষ্ঠাতা ক্ষিতীব প্রভুপাদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে এবং ভারতে কয়েক মাস তাঁর সঙ্গে থাকার মাধ্যমে তাঁর মনকে শুদ্ধ করেছিলেন, অর্থাৎ আধ্যাত্মিকতার বীজ রোপণ করেছিলেন। পরে স্বামীজি তাঁর শিষ্য অম্বারী দাসকে (হেনরি ফোর্ড-৩) আমেরিকায় ফেরত পাঠান। নিজে প্রগতির পথ দেখাতে থাকে। প্রয়োজন এই যে, আমরা প্রথমে চিত্তশুদ্ধির জন্য অনুসন্ধিৎসু হই এবং তারপর সাধকের পরিচয়ের জন্য বিচারশীল হই।
