পাবলিক আদালত
জনতার দরবার
একদিন রাজা কৃষ্ণদেব রায় শিকারে গেলেন। সে বনে বনে ঘুরে বেড়াত। দরবারীরা পিছনে পড়ে রইল। সন্ধ্যে হতে চলেছে। তিনি ঘোড়াটিকে একটি গাছের সাথে বেঁধেছিলেন। পাশের গ্রামে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। পথচারীর ছদ্মবেশে সে কৃষকের কাছে গেল। বললেন, আমি অনেক দূর থেকে এসেছি। আমরা কি রাতে আশ্রয় পাব? আমার কাছে শুধু একটা পুরানো কম্বল আছে, আমি কি তাতে শীতের রাত কাটাতে পারি?" রাজা মাথা নেড়ে 'হ্যাঁ' বললেন।
রাজা রাতে গ্রামে ঘুরে বেড়ালেন। ভয়ানক দারিদ্র্য ছিল। তিনি প্রশ্ন করেন, আপনি আদালতে গিয়ে অভিযোগ করেন না কেন? কিভাবে যাব? রাজাকে ঘেরা ধান্দাবাজরা। এমনকি কেউ আমাদের আদালতে প্রবেশ করতে দেয় না।" কৃষক বলল।
সকালে রাজধানীতে ফেরার পর রাজা মন্ত্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের ডাকলেন। তিনি বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি, আমাদের রাজ্যের গ্রামের অবস্থা ভালো নয়। গ্রামের জন্য ভালো কাজ করার জন্য আপনি কোষাগার থেকে অনেক টাকা নিয়েছেন। তার কি হয়েছে?"
মন্ত্রী বললেন, "স্যার, সমস্ত টাকা গ্রামের উন্নতির জন্য ব্যয় করা হয়েছে। কেউ তোমাকে ভুল বলেছে।" মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর তেনালি রামকে ডাকতে পাঠালেন। গতকালের পুরো ঘটনা জানালেন। তেনালি রমা বললেন, “মহারাজ, জনতা আদালতে আসবে না। এখন তার দরবারে যাওয়া উচিত। তাদের প্রতি যে অন্যায় হয়েছে তা তাদের মধ্যে ফয়সালা করতে হবে।"
পরের দিন রাজা দরবারে ঘোষণা করলেন- "আগামীকাল থেকে আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে দেখব মানুষ কেমন আছে!" একথা শুনে মন্ত্রী বললেন, মহারাজ, মানুষ খুশি। আপনি চিন্তা করবেন না. শীতকালে, আপনি অকারণে কষ্ট পাবেন।" তারা যা বলবে তাই হবে। কিন্তু তুমিও দেখো মানুষের সুখ। মন্ত্রী রাজাকে দেখাতে চাইলেন আশেপাশের গ্রামগুলো। কিন্তু রাজা তার ঘোড়া ঘুরিয়ে দিল দূর গ্রামের দিকে। রাজাকে সামনে দেখে লোকেরা তাদের সমস্যার কথা খুলে বলতে শুরু করে। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল। রাজা কৃষ্ণদেব রায় ঘোষণা করলেন- এখন প্রতি মাসে অন্তত একবার তিনি নিজে জনসাধারণের কাছে গিয়ে তাদের সমস্যার সমাধান করবেন।
