বিড়ালের গলায় ঘণ্টা
বিড়ালের গলায় ঘণ্টা
অনেক বড় বাড়িতে শত শত ইঁদুর বাস করত। এরা লাফিয়ে লাফিয়ে আরামে পেট ভরত এবং বিপদ দেখলেই গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকত। একদিন সেই বাড়িতে কোথা থেকে একটা বিড়াল এসেছিল তা জানা নেই। বিড়ালের চোখ ইঁদুরের দিকে পড়তেই মুখে জল এসে গেল। সেই ইঁদুরগুলোকে খেয়ে ফেলার চিন্তায় বিড়ালটি একই বাড়িতে ক্যাম্প করে। বিড়াল যখনই ক্ষুধার্ত মনে করত, অন্ধকার জায়গায় লুকিয়ে থাকত এবং ইঁদুরটি গর্ত থেকে বেরিয়ে আসার সাথে সাথেই এটিকে মেরে খাবে। এখন বিড়াল প্রতিদিন ইঁদুর খেতে শুরু করেছে। এভাবে কয়েকদিনের মধ্যেই সে মোটা ও সতেজ হয়ে গেল। ধীরে ধীরে ইঁদুরের সংখ্যা কমতে দেখে তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বিড়ালের ভয় ইঁদুরদের মনে বসতি স্থাপন করে। বিড়াল থেকে পালানোর উপায় খুঁজে বের করার জন্য সব ইঁদুর মিলে এক বৈঠকের আয়োজন করে। সভায় সকল ইঁদুর তাদের মতামত পেশ করলেও সর্বসম্মতিক্রমে কোনো প্রস্তাব পাস করা যায়নি। সমস্ত ইঁদুরের মধ্যে হতাশা ছড়িয়ে পড়ল।
তখন একটি বৃদ্ধ ইঁদুর তার জায়গায় দাঁড়িয়ে বলল - শোন ভাই, আমি আপনাদের একটা পরামর্শ দিচ্ছি, যা দিয়ে আমাদের সমস্যার সমাধান হতে পারে। কোথাও থেকে ঘণ্টা আর সুতো পেলে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বেঁধে দেব। বিড়াল হাঁটলে তার গলায় বাঁধা ঘণ্টাটাও বাজতে শুরু করবে। ঘণ্টার আওয়াজ আমাদের জন্য বিপদের সংকেত হবে। ঘণ্টার শব্দ শোনা মাত্রই আমরা সতর্ক হব এবং নিজ নিজ গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকব।
বৃদ্ধ ইঁদুরের এই পরামর্শ শুনে সমস্ত ইঁদুর আনন্দে লাফিয়ে উঠল এবং আনন্দ প্রকাশ করতে নাচতে শুরু করল। ইঁদুররা ভেবেছিল যে এখন তারা বিড়াল থেকে চিরতরে মুক্তি পাবে এবং তারা আবার নির্ভীকভাবে ঘুরে বেড়াতে পারবে। আপনি এমনভাবে উদযাপন করছেন যেন আপনি একটি যুদ্ধ জিতেছেন। আপনি কি ভেবে দেখেছেন যতক্ষণ না বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিড়াল থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। অভিজ্ঞ ইঁদুরের প্রশ্নের কোনো উত্তর ছিল না তার কাছে। ঠিক তখনই তারা শুনতে পেল বিড়াল আসছে এবং সমস্ত ইঁদুর ভয় পেয়ে তাদের গর্তে ঢুকে গেল। সমস্যা সমাধানের জন্য সেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
