শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাহচর্য
শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে
একটি জঙ্গলে বাস করত একটি শিয়াল। একবার খাবারের লোভে সে শহরে চলে গেল। শহরের কুকুরগুলো তার পিছু নিল। ভয়ে শিয়ালটি এক ধোপা ঘরে ঢুকল। ধোপাদের উঠানে একটা পুকুর ছিল। এ কারণে তাকে সম্পূর্ণ নীল রঙ করা হয়েছিল। কুকুররা যখন তার নীল শরীর দেখে, এটাকে কিছু অদ্ভুত এবং ভয়ানক প্রাণী মনে করে, তারা পালিয়ে গেল। সুযোগ পেয়ে শেয়াল বের হয়ে সোজা বনে চলে গেল। নীল রঙের অদ্ভুত প্রাণীটিকে দেখে সিংহ ও বাঘও ভয় পেয়ে গেল। ওরা এদিক ওদিক ছুটতে লাগল।
ধূর্ত শিয়াল, সবাই ভয়ে ভয়ে জেনে বলল- 'ভাই, আমাকে দেখে এভাবে দৌড়াচ্ছেন কেন? আজ স্রষ্টা নিজেই নিজ হাতে আমাকে বানিয়েছেন। পশুদের রাজা ছিল না। তুমি পৃথিবীতে গিয়ে বন্য পশুদের অনুসরণ কর। আমি ব্রহ্মার আদেশে এসেছি।’ এই কথা শুনে নীলাভ প্রাণীটি তাদের সবার কর্তা- সিংহ, বাঘ প্রভৃতি সমস্ত প্রাণী এসে তাঁর কাছে বসল। তারা তাকে খুশি করার জন্য তাকে তোষামোদ করতে শুরু করে। একইভাবে, বাঘকে সেনাপতি করা হয়েছিল, চিতাকে পানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, নেকড়েকে দারোয়ান করা হয়েছিল। তিনি সমস্ত প্রাণীর উপর কিছু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন, কিন্তু তার জাতের শিয়ালদের সাথেও কথা বলেননি। তাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। শেয়াল প্রভুর মতো তিনি সমস্ত জীবের মধ্যে মাংস বিতরণ করতেন। এভাবে তার রাজত্ব সুচারুভাবে চলতে থাকে।
একদিন সে তার দরবারে বসে ছিল। তিনি দূর থেকে শিয়ালদের কান্না শুনতে পান। শেয়ালের 'হুয়া-হুয়া' শুনে সে ফুঁসে উঠল এবং মহা আনন্দে 'হুয়া-হুয়া' বলতে লাগল। তার চিৎকারে সিংহ ও অন্যান্য প্রাণীরা জানতে পারল এটা একটা নাবালক শেয়াল। লজ্জা ও ক্রোধে ভরা শিয়ালকে এক আঘাতে মেরে ফেললেন। তাই বলা হয়েছে যে আত্মার সঙ্গীকে কখনই পরিত্যাগ করা উচিত নয়।
