উট কোন দিকে বসে তা দেখার জন্য

bookmark

দেখতে হবে উট কোন দিকে বসে 
 
 এক গ্রামে সপ্তাহে একবার হাট বসত। ডাল, সবজি, শস্য, জামাকাপড় অর্থাৎ গৃহস্থালির যাবতীয় জিনিসপত্র ওই হাটে পাওয়া যেত। আশেপাশের গ্রামের মানুষও ওই হাট থেকে জিনিসপত্র কিনতে আসত। গরুর গাড়ি, উট, খচ্চরে চড়ে দোকানিরা তাদের মালামাল নিয়ে আসত হাটে বিক্রি করার জন্য। ছোট দোকানদাররা মাথায় মালামাল রাখতেন। সেই গ্রামে কুঞ্জরা ও কুমোরও বাস করত। দু’জনেই হাট-বাজারে নিয়ে গিয়ে মালামাল বিক্রি করতেন। কুঞ্জরা হাটে শাক-সবজি ও ফল বিক্রি করত এবং হাটে মালামাল নিয়ে যাওয়ার জন্য কুমোরকে অনেক টাকা দিতে হতো, যার কারণে তার লাভ ছিল খুবই কম।
 
 একই গ্রামে একটি উট বাস করত। কুঞ্জরা ও কুমোর ভেবেছিল, তারা তাদের মালামাল উটে বোঝাই করে হাটে নিয়ে যাবে এবং দেড়-দুই টাকা দেবে। এতে করে উভয়েরই উপকার হবে। হাটের দিন এলেই কুঞ্জদে একদিকে উটের পিঠে তার শাকসবজি ও ফল বোঝাই করে, অন্যদিকে কুমোর তার মাটির হাঁড়ি বোঝাই করে। দুজনেই উটের সাথে হাঁটতে লাগলেন। উটটিও দড়ি ধরে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিছুদূর যাওয়ার পর উট ঘাড় ঘুরিয়ে সবজির পাতা ঝুলতে দেখল। উটের দড়ি লম্বা হওয়ার কারণে সে ঘাড় পেছন দিয়ে সবজির পাতা খেয়েছিল। কিছুক্ষণ পর উটটি আবার ঘাড়ের পেছন দিয়ে শাক-সবজির পাতা খেয়ে ফেলল, তখন কুঞ্জদে উটকে বলল, ভাই, উটটি সবজি খাচ্ছে। এর স্ট্রিং টানুন এবং এটি রাখুন। না হলে সব সবজি নষ্ট হয়ে যাবে। উট ধনুক মেনে দড়ি টেনে ধরল। কিন্তু উটটি তার অভ্যাস ত্যাগ না করে বারবার ঘাড় দিয়ে শাক-সবজি খেতে থাকে। কুঞ্জদাকে হারানো দেখে কুমোর খুব আনন্দ পেল। কুমোর তখন কুঞ্জদেকে নিয়ে মজা করতে থাকে। কুঞ্জরা মনে মনে ভাবতে লাগল যে হাটে পৌঁছলে সবজির ওজন কমে যাবে। তখন কুঞ্জদে বললেন, 'দেখো উট কোন দিকে বসে?' ধীরে ধীরে সবজির ওজন কমতে থাকে, তাই বাসনপত্র আরও নিচের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কুমারকে দেখে চিন্তিত হতে লাগল। কুমার ভাবতে লাগলো, দেখা হবে উট কোন দিকে বসে। উটটি হাটে পৌঁছলে কুনজাদে ও কুমোর তাদের মালপত্র রাখার জায়গায় উটটিকে বসিয়ে দেয়। পাত্রের ভারী ওজনের কারণে উটটি একই পাশে বসল। বেচারা কুমোরের সব বাসনপত্র ভেঙ্গে গেল। কুমারের ক্ষতি দেখে কুঞ্জদে বললেন, উট কোন দিকে বসে?