সত্যবাদিতার প্রভাব

bookmark

সত্যচরণ
 
 এর প্রভাব সেই দিনের কথা যখন সম্রাট অশোক পাটলি-পুত্র নগরে গঙ্গা নদীর তীরে হাঁটছিলেন। তার সাথে তার মন্ত্রী, দরবারী এবং শত শত লোক ছিল। নদী তার পূর্ণ উচ্চতায় ছিল। জলের প্রবল বেগ দেখে সম্রাট জিজ্ঞেস করলেন- 'এমন কোন লোক আছে যে এই প্রবল গঙ্গার প্রবাহকে ফিরিয়ে দিতে পারে?' একথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেল। সেই ভিড় থেকে কিছু দূরে বিন্দুমতি নামে এক বৃদ্ধ বেশ্যা দাঁড়িয়ে। তিনি সম্রাটের কাছে এসে বললেন- 'মহারাজ, আমি আপনার সত্য-কর্মের অনুরোধ করে এটি করতে পারি।' সম্রাট তাকে আদেশ করলেন। সেই বেশ্যার অনুরোধে পরাক্রমশালী গঙ্গা উল্টো দিকে গর্জন করে ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহিত হতে লাগল।
 
 সম্রাট অশোক স্তব্ধ হয়ে গেলেন। তিনি পতিতাকে জিজ্ঞাসা করলেন কিভাবে সে এই বিস্ময়কর কাজটি করল। পতিতা বলল- 'মহাশয়, সত্যের শক্তিতে আমি উল্টো দিকে গঙ্গা ভাসিয়ে দিয়েছি।' রাজা অবিশ্বাসের সাথে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি একজন সাধারণ বেশ্যা.... তুমি একজন স্বাভাবিক পাপী! 
 
 বিন্দুমতি উত্তর দিলেন- 'আমি একজন দুষ্টু, চরিত্রহীন মহিলা হলেও 'সত্য কর্মের' ক্ষমতা আমার আছে। মহারাজ, যেই আমাকে টাকা দিত, সে ব্রাহ্মণ হোক, ক্ষত্রিয় হোক, বৈশ্য হোক বা শূদ্র হোক বা অন্য কোনো বর্ণের হোক, আমি তাদের সবার সঙ্গে সমান আচরণ করতাম। যিনি আমাকে টাকা দিতেন, তিনি সবার সমান সেবা করতেন। স্যার, এই 'সত্য কর্ম' যার দ্বারা আমি পরাক্রমশালী গঙ্গাকে বিপরীত দিকে প্রবাহিত করেছি।'
 
 উপসংহার:
 
 ধর্মের প্রতি সত্যবাদিতা মানুষকে মহান শক্তি দেয়। আমরা যদি সারা জীবন পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে আমাদের দায়িত্ব পালন করি, তবে এই সত্যটি প্রত্যক্ষ করে আমরা বিন্দুমতী বেশ্যার মতো অলৌকিক কাজ করতে পারি।